খুলনার কয়রা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলের বোরো ধান ক্ষেতে ইঁদুরের উৎপাত দেখা দিয়েছে। ইঁদুর নিধনে ঔষধ প্রয়োগ করেও কোন উপকার পাচ্ছেন না। এতে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সার, কীটনাশক, শ্রমিকের দাম বৃদ্ধির বোঝা মাথায় নিয়ে এবার বোরো আবাদ করেছেন কৃষকরা। ইঁদুরের উৎপাত থেকে রেহাই পেতে কৃষকদের কোন পরামর্শ দিচ্ছেন না উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বড় মৌসুমে ৫ হাজার ৭৯৫ হেক্টর জমিতে বড় আবাদ করা হয়েছে এবং কৃষি অফিস থেকে ১৫ শত কৃষকের মাঝে বোরো চাষের জন্য কৃষক প্রতি দুই কেজি করে হাইব্রিড বীজ বিতরণ করা হয়েছে।
ভাগবা পশ্চিম বিলের কৃষক মোঃ গোলাম মোস্তফা শিকারী বলেন, আমি এ বছর ১০ বিঘা জমিতে বোর ধান লাগাইছি। প্রায় এক মাসের মত সময় ধরে ইঁদুরে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধান গাঢ় কাটিতেছে। ঔষধ দিছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কোন উপসহকারী কৃষি অফিসার একদিনও আমাদের বিলে আসেননি।
একই বিলের কৃষক আবু সাত্তার গাজী বলেন, আমি এ বছর চারবিঘা জমিতে ধান লাগাইছি কিন্তু ইদুরে ধান গাঢ় কাটতেছে খুব।
তিনি আরও বলেন, উপসহকারী কৃষি অফিসার মোটেও আসে না। যদি উপসহকারী কৃষি অফিসার একটু বিলে এসে আমাদের পরামর্শ দিতো তাহলে আমরা সেই ঔষধ প্রয়োগ করতাম।
কুশোডাংগা বিলের কৃষক আসাদুল ইসলাম বলেন, আমি এ বছর পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগাইছি খেতে ইঁদুরে ধান কাটছে খুব। ঔষধ দিচ্ছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আমি প্রতি বছর ধান চাষ করি কিন্তু কৃষি অফিস থেকে কোন প্রণোদনা পায়নি এবং আমাদের ইউনিয়নের উপ সহকারী কৃষি অফিসার আমাদের বিলে মোটেও আসে না।
মহারাজপুর বিলের কৃষক আবুল বাশার বলেন, আমি এ বছর ১ বিঘা জমিতে বোর ধান লাগাইছি। হঠাৎ করে ধানগাছে ইঁদুরে লাগছে ঔষধ দিচ্ছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমাদের বিলে এখনো কোন উপসহকারী কৃষি অফিসার আসেনি। যদি কোন অফিসার এসে আমাদের একটু পরামর্শ দিত তাহলে আমরা সেই ওষুধ আমাদের ক্ষেতে প্রয়োগ করতাম। তাহলে ইঁদুরের হাত থেকে আমাদের বিলের ধানগুলো রক্ষা পেত।
একই কথা বলেন একই বিলের কৃষক হাসান মাহমুদসহ আরও অনেকে।
কুমারখালী বিলের কৃষক মোঃ ফজলু গাজী বলেন, আমি এবছর এক বিঘা জমিতে বোরো ধান লাগাইছি। হঠাৎ করে ধান ক্ষেতে ইদুর লেগেছে ঔষধ দিচ্ছি কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।
কয়রা উপজেলা কৃষি অফিসার সঞ্জয় কুমার সরকার বলেন, ইঁদুরের উপদ্রব্য থেকে কৃষকদের রক্ষা করার জন্য আমাদের কৃষি অফিস, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ কৃষকদের সচেতায় গ্রুপ মিটিং ও উঠান বৈঠক করে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছেন।
খুলনা গেজেট/এনএম